ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ই মার্চ ২০২৪ , বাংলা - 

জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ছাত্রদলের হুমকি

2021-06-26, 12.00 AM
জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ছাত্রদলের হুমকি

বিএনপি ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে সমালোচনা করায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে হুমকি দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা।শনিবার (২৬ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভা চলাকালে তারা এই হুমকি দেন। সভাটির আয়োজন করেছিল এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির প্রধান নেতৃত্বের সমালোচনা করে বলেন, বিএনপির ক্ষমতায় আসারই ইচ্ছে নাই। ক্ষমতায় আসতে হলে ইচ্ছে, আগ্রহ থাকতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে পরিকল্পনা করতে হবে, যে কি কি জায়গায় পরিবর্তন আনবে। সেগুলো নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন। আজকে বিএনপি পরিচালিত হচ্ছে আল্লাহর ওহী দিয়ে।

এ সময় লন্ডনে অবস্থান করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনকে উদ্দেশ্য করে জাফরুল্লাহ বলেন, তাছাড়া ওহী লন্ডন থেকেই বেশি আসে। সম্প্রতি লক্ষ করেছি, গত নির্বাচনে লোকজনই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এই স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটাতে হলে, সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ঘটাতে হবে বিএনপি'র নিজের ঘরে। আপনার কি খালেদা জিয়ার চেহারা দেখেছেন, মনের মধ্যে একটা ডিপ্রেশনের ভাব। এটা আলঝেইমারের প্রথম লক্ষণ। তারা (সরকার) যেভাবে উনাকে জীবিত থেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে, বিএনপির লোকেরা হয়তো উপলব্ধি করতে পারে না। তার যদি মুক্তি চায়, আমি বারবার বলেছি তারেক তুমি ২ বছর চুপচাপ বসে থাকো। পারো তো বিলেতে লেখাপড়ায় যুক্ত হয়ে যাও, সেখানে বহুভাবে লেখাপড়া হয়।

একথা বলার পরই ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওছার সালাম দিয়ে বলে ওঠেন, আপনি বিএনপির কী? আপনি বিএনপিকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলেন! এ সময় জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন- না কিছু না, এটাতো গণতন্ত্রে আমার বলার অধিকার আছে। তখন ছাত্রদলের ওই নেতা বলেন, না আপনি অন্যদেরকে নিয়ে বলেন। আপনি আমাদের নেতা সম্পর্কে বলছেন, আপনি তো বিএনপি'র কেউ না। তারপর জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, 'কেউ না তো বটেই। কথা শুনে তারপর বলেন। আপনাদের ভালোর জন্যই বলতেছি। আপনাদের ভালোই আপনারা বোঝেন না। তখন কাওছার বলেন, 'না না আমরা অবশ্যই বুঝি, আপনি আপনারটা বুঝেন, আমরা আমাদেরটা বুঝি। আপনি আমাদের নেতাদেরকে নিয়ে কখনো কথা বলবেন না। কখনোই কথা বলবেন না। আর যদি কখনো কথা বলেন, পরবর্তী কিছু হলে আমরা কিন্তু দায়ী থাকব না। আপনি জয়রে (সজিব ওয়াজেদ জয়) নিয়ে বলেন, শেখ হাসিনাকে (প্রধানমন্ত্রী) নিয়ে বলেন। এ কথা বলার পর তারা চলে যান।

কথা চালিয়ে যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাইরে থেকে হুকুম নামা দিয়ে হবে না, আজকে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া ক্ষমতার পরিবর্তন সম্ভব না।

ছাত্রদলের ওই নেতার প্রসঙ্গ টেনে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ওখানে (আওয়ামী লীগে) তারা করছে এক ব্যক্তির বন্দনা। এখানেও কিছুক্ষণ আগে যে ঘটনা ঘটল, সেটাতেও এক ব্যক্তির বন্দনা। এভাবে এক ব্যক্তির বন্দনা জাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করা যায় না, বিশেষ করে আমার মত লোককে ভয় দেখিয়ে কণ্ঠ রোধ করা যায় না। আমি যেটা ভালো মনে করবো, জাতির জন্য প্রয়োজন মনে করবো, আমি বলেই যাবো। সেটা কারো পছন্দ হোক বা নাই হোক।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ প্রমুখ।