ঢাকা, শনিবার ২০ই এপ্রিল ২০২৪ , বাংলা - 

পদ্মার ভাঙনের হুমকিতে পাটুরিয়া ফেরিঘাট

স্টাফ রিপোর্টার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2021-06-09, 12.00 AM
পদ্মার ভাঙনের হুমকিতে পাটুরিয়া ফেরিঘাট

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানি বাড়তে শুরু করে পদ্মা-যমুনা নদীর মানিকগঞ্জ অংশে। এতে করে ভাঙনের কবলে পড়ে হুমকির মুখে রয়েছে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকা। এরই মধ্যে ফেরিঘাট এলাকার প্রায় ১০০ গজ বিলীন হয়ে গেছে পদ্মার ভাঙনে। ভাঙনের কবল থেকে খুব দ্রুত সময়ে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকা রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন পরিবহন শ্রমিক, এলাকাবাসী ও সাধারণ যাত্রীরা।

বুধবার (৯ জুন) সকাল ১১টার দিকে সরেজমিনে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট এলাকায় ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়। ভাঙনের কারণে এরই মধ্যে ফেরিঘাটের তিন নম্বর ঘাট পন্টুন সংস্কার করে অনত্র স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ। ভাঙনের কবল থেকে ফেরিঘাট এলাকা রক্ষার বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।


জানা যায়, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার লাখো মানুষের যাতায়াত। গড়ে প্রতিদিন ছোট বড় মিলে প্রায় আড়াই হাজার যানবাহন নদীপথ পারাপার হয় এই নৌরুট দিয়ে। ফেরিঘাটের ১, ৩,৪ এবং ৫ নম্বর ঘাট পন্টুনের আশেপাশের কিছু এলাকা এরই মধ্যে পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির কবলে রয়েছে ঘাট পন্টুন এলাকাগুলোও। একই অবস্থা পাটুরিয়া লঞ্চঘাটেরও।

এসব বিষয়ে আলাপ হলে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ফেরিতে থাকা ট্রাক চালক হুমায়ন মিয়া বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে প্রায় অধিকাংশ সময় ভোগান্তি পোহাতে হয়। এরই মধ্যে আবার নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। ফেরিতে উঠার রাস্তাও খানাখন্দে ভরপুর। এছাড়া পন্টুন স্থানান্তর করায় নতুন রাস্তা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খুব ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। দ্রুত সময়ে ভাঙন বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।


ফরিদপুরমুখী যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট। কোন কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলে হাজার হাজার যাত্রীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়ে যায়। অসময়ে পদ্মায় যে ভাঙন শুরু হয়েছে তা বেশ হতাশাজনক। কাজেই দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত পাটুরিয়া এবং দৌলতদিয়া উভয় ফেরিঘাট এলাকায় নজর দেওয়া বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এসব বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বিআইডব্লিউটিএ এর দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনীহা জানিয়ে বলেন, প্রতি বছরই ঘাট এলাকা ভাঙনের কবলে পড়ে। নদীপাড় এলাকায় শুধু জিও ব্যাগ ফেলে এই ভাঙন থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়। স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকানোর জন্য ওপর মহলে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।


মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন বলেন, পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকার দুই কিলোমিটার অংশ দেখবাল করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন অথরিটি। তবে জরুরি প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ের কোন নির্দেশনা থাকলে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে সহায়তা করা হয়। এসব বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ভালো বলতে পারবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন অথরিটি আরিচা কার্যালয়ের দায়িত্বরত নির্বাহী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিন পাঠানের মুঠোফোনে একাদিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ম্যাসেজ করা হলেও তিনি কোন রিপ্লাইও করেননি। আরিচা কার্যালয়ের পাশাপাশি তিনি ঢাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী।